ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায়। ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে যে ১৫টি কাজ খুবই জরুরী

বর্তমান সময়ে ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ হিসেবে পরিচিত। অর্থাৎ যে ব্যক্তি ক্যান্সার আক্রান্ত হয় তার মৃত্যু নিশ্চিত। কেননা ক্যান্সারের কোন প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তাই আমাদের উচিত ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জানা। কারণ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে যে ১৫টি কাজ খুবই জরুরী সে সম্পর্কে আজ আমরা আলোচনা করবো।
আপনি যদি ক্যান্সার থেকে বাঁচতে চান তাহলে তাহলে আপনাকে ক্যান্সার রোগ সম্পর্কে জানতে হবে। আজকের পোস্টে আমরা ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায় এবং ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে যে ১৫টি কাজ খুবই জরুরী সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। তাই ক্যান্সার প্রতিরোধে সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ুন।

ক্যান্সার কি ?

ক্যান্সার হল একটি মরণব্যাধি রোগ। ক্যান্সার হচ্ছে দেহের অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন। আমাদের শরীরের কোষগুলো একটি নিদিষ্ট সময় পর মারা যায় এবং সেখানে নতুন কোষ সৃষ্টি হয়। উক্ত নতুন কোষ সৃষ্টির সময় যদি কোষ বিভাজন অনিয়ন্ত্রিত পর্যায়ে চলে যায় তাহলে ত্বকের নিচে মাংসের দোলা অথবা গোল জাতীয় চাকা দেখা দেয় একে আমরা টিউমার বলে থাকি। এই টিউমারকে ক্যান্সার বলা হয়।

সাধারণত প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার রোগ সহজে ধরা পড়ে না যার কারণে প্রথমে এর কোন চিকিৎসা দেয়া হয় না। সম্পূর্ণ একটি অংশ আক্রান্ত হওয়ার পর ক্যান্সারের বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পাই তাই সে সময়ে আর ক্যান্সার সারানো সম্ভব হয় না। তাই সবাই বলে ক্যান্সার রোগের কোন বাস্তবিক সেবা ঔষধ এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। সাধারণত ২০০ প্রকারের বেশি ক্যান্সার রয়েছে। 

প্রত্যেক ক্যান্সারের জন্য আলাদা আলাদা লক্ষণ প্রকাশ পায় এবং প্রত্যেক ক্যান্সারের চিকিৎসা পদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন। আজকের পোস্ট থেকে আমরা ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জানব। ক্যান্সার রোগী কমাতে যে ১৫ টি কাজ খুবই জরুরী সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে যে ১৫টি কাজ খুবই জরুরী

প্রিয় পাঠক, এখন আমরা জানবো ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধে কোন কাজগুলো আমাদের অবশ্যই করা উচিত। কারণ ক্যান্সারের কোন সাধারণ চিকিৎসা নেই সুতরাং আমাদের ক্যান্সার পত্রিকার এর চেয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করতে হবে। কেননা প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই সেরা।

  • শারীরিকভাবে নিজেকে সক্রিয় রাখুন।
  • একটি স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন।
  • অ্যালকোহল জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • ফাস্টফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।প্র
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্পুরক থেকে নিজেকে দূরে রাখুন।
  • ছোট বাচ্চাকে নিয়মিত বুকের দুধ পান করান।
  • নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করুন।
  • সকল প্রকার মাদকদ্রব্য এড়িয়ে চলুন।
  • প্রক্রিয়াজাত মাংস এবং রেড মিট থেকে বিরত থাকুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খান।
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত টিকা দিন।
  • ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকুন।
  • সবুজ শাক-সবজি ফলমূল খান।
নিজেকে সুস্থ রাখতে এবং ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে উপরিক্ত ১৫টি কাজের অভ্যাস গড়ে তুলুন। আজকের পোস্ট থেকে আমরা জানবো ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায় এবং জমাতে যে ১৫ টি সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাবে যেসব খাদ্য

এমন কোন খাবার নেই যে খাবার ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে। কিন্তু পুষ্টিকর খাবার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তাই আমাদের ক্যান্সার থেকে বাঁচতে হলে খাবারের তালিকায় নিম্নোক্ত খাবারগুলো রাখতে পারি।

সবুজ শাক-সবজিও ফলমূল
ক্যান্সারে ঝুঁকি কমাতে খাদ্য তালিকায় নিয়মিত শাকসবজি এবং দিনে অন্তত একটি করে ফল খাওয়া উচিত। সবুজ শাকসবজিতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন মিনারেল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যারোটিন পলিফেনাল এবং ফাইটোকেমিক্যাল থাকে এগুলো উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তার সাথে শরীর থেকে ক্যান্সার ঝুকি কমাতে সাহায্য করে। কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলোতে এই সকল কষ্টিপাড়ান থাকে যেমন গাজর মিষ্টি আল তোমরা মরিচ। 

এগুলো খাবারের মধ্যে গাজরের এক ধরনের বিশেষ উপাদান পাওয়া যায় যা ক্যান্সার রোগী কমাতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে। কিছু কিছু রঙিন ওর সবজিতে আলফা ও বিটা কেরোটিন পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। তাই আমাদের উচিত নিয়মিত খাদ্য তালিকায় ৩০০ গ্রাম থেকে ৪০০ গ্রাম ফলমূল রাখা।

পানীয়
অনেকেই মনে করে পানীয় আমাদের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাই কিন্তু কোমর পানি হতে এমন কিছু কথা আছে যা ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। যেমন কফিতে রয়েছে ফাইটোকেমিক্যাল লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে গ্রিন টিতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এপিগ্যালোকটচিন গ্যালেট ৩ ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে এবং ঝুকি কমাতে সাহায্য করে তবে অতিরিক্ত পানীয় খাওয়া উচিত নয়।

টক জাতীয় ফল
আমরা জানি টক জাতীয় ফলে সাধারণত ভিটামিন সি থাকে। টক জাতীয় ফলে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম থাকে। আর অধিকার জাতীয় খাবার ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। টক জাতীয় ফল গুলোর মধ্যে কমলালেবুতে সবচাইতে বেশি আঁশ থাকে। তাছাড়া ত্বক জাতীয় ফলের খোসায় এক ধরনের বিশেষ উপাদান থাকে। টক জাতীয় ফলের খোসায় লিমোনয়েড ও ট্যানগেরিটিন নামক ফাইটোকেমিক্যাল থাকে যা ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

শস্যদানা
বিভিন্ন ধরনের শস্যদানা জীবন বার্লি, লাল চাল, লাল আটা ওটস ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ও ফাইটোকেমিক্যাল থাকে। এই উপাদানগুলো স্তন ক্যান্সার ও কোলেস্টেরলের মত ভয়াবহ ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে তাই আমাদের খাদ্য তালিকায় উক্ত শস্যদানাগুলো রাখা প্রয়োজন।

বাদামজাতীয় খাবার
বাদামে সাধারণত ক্যান্সার প্রতিরোধে পুষ্টি উপাদান থাকে। তাই ক্যান্সার রোগী কমাতে নিয়মিত বিভিন্ন রকম বাদাম খাওয়া প্রয়োজন।

উপরোক্ত খাদ্যগুলো ব্যতীত আরো অনেকগুলো ফলমূল রয়েছে যেগুলো ক্যান্সার রোগী কমাতে সাহায্য করে যেমন পেয়ারা আপেল আঙ্গুর ডালিম ইত্যাদি এই খাবারগুলোতে ফাইটোকেমিক্যাল থাকে ক্যান্সার ঝুকি কমাতে সাহায্য করে।আজকের পোস্ট থেকে আমরা থেকে বাঁচার উপায় এবং মতে যে ১৫ টি কাজ খুবই জরুরী সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।

স্কিন ক্যান্সার হলে কি মানুষ মারা যায়?

অনেকগুলো ক্যান্সারের মধ্যে স্কিন ক্যান্সার অন্যতম। স্কিন ক্যান্সার মানে আপনার ত্বকের ক্যান্সার। ত্বকের ক্যান্সার সাধারণত তিন প্রকার হয় যেমন স্কোয়ামাস, বেসাল ও ম্যালিগন্যান্ট। এই তিন প্রকার ক্যান্সারের মধ্যে ম্যালিগন্যান্ট অনেক মারাত্মক হয়ে থাকে এই ক্যান্সারে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়। প্রতিবছর গোটা পৃথিবীতে দুই লাখেরও বেশি মানুষ ম্যালিগন্যান্ট স্কিন ক্যান্সার আক্রান্ত হয় এবং এদের মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার এর মত মানুষ মারা যায়। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে স্কিন ক্যান্সার হলেও মানুষ মারা যায়।

ক্যান্সার প্রতিরোধক ফল কোনটি?

আমরা উপরে ইতিমধ্যেই ক্যান্সার প্রতিরোধক কিছু কিছু খাবারের নাম সম্পর্কে জেনে গেছি। অনেকেই প্রশ্ন করতে পারে, ক্যান্সার প্রতিরোধক ফল কোনটি? সাধারণত যে ফলগুলোতে ফাইটোকেমিক্যাল থাকে সেগুলো ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে সাহায্য করে। তাছাড়াও ডালিম ও বেদনাতে ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ডালিম ও বেদেনাই ফলিফেনল নামে একযোগ থাকে যা ক্যান্সার রোগ সৃষ্টিকারী কোষগুলোকে ধ্বংস করে। 

তাছাড়া আরো অন্যান্য ফল যেমন কমলালেবু ক্যান্সার ফাইটার হিসেবে কাজ করে। কালো আঙ্গুর ফলে রেসভেরাট্রল নামে এক ধরনের ক্যান্সার রোধি উপাদান থাকে শরীরের ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। আরো অনেক ফল রয়েছে যেমন আপেল, পেয়ারা কলা এবং টকজাতীয় ফলমূল ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

কি খাবার খেলে ক্যান্সার হতে পারে?

বিভিন্ন ধরনের খাবার আছে যেগুলো খেলে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে সেগুলো কি হলোঃ

  • প্রক্রিয়াজাত মাংস
  • মদ
  • ভাজাপোড়া
  • মাদকদ্রব্য
  • প্যাকেটজাত দ্রব্য
  • মিষ্টি জাতীয় খাবার
  • আগুনের ঝলসানো খাবার
  • লো ফ্যাট প্রোডাক্ট
  • সাদা ময়দা
  • সবজি তেল
  • রেড মিট
উপরোক্ত খাবারগুলো অধিক খেলে ক্যান্সারে ঝুঁকি অনেক বেশি বেড়ে যায় তাই যত সম্ভব উপরোক্ত খাবারগুলো এড়িয়ে চলাই উচিত।

ক্যান্সার রোগী কি আম খেতে পারবে?

আম একটি মৌসুমী ফল। আমি প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। তাই শরীরে হাড়ের ক্যালসিয়াম যোগান দিতে প্রচুর পরিমাণে আম খেতে হয়। তাছাড়া আমি গ্যালিক অ্যাসিড, মিথাইল গ্যালেট, অ্যাস্ট্রাগ্যালিন, ফাইসেটিন, কোয়েরসেটিন ইত্যাদি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। তাই বলা যায় ক্যান্সার রোগ অবশ্যই আম খেতে পারবে। আজকের পোস্টে আমরা জেনেছি, ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায় এবং ঝুঁকি কমাতে যে ১৫ একটি কাজ খুবই জরুরী সে সম্পর্কে।

থেরাপি দিতে কত টাকা খরচ হয় ?

রেডিয়েশন থেরাপি কে সংক্ষেপে থেরাপি বলা হয়। ক্যান্সার চিকিৎসায় অন্যতম একটি পদ্ধতি থেরাপি। থেরাপি দিয়ে আক্রান্ত কোষ কে ধ্বংস করা হয়। থেরাপি বিভিন্ন জায়গায় দেওয়া হয় যেমন ব্রেস্ট, অন্ত্রের, ইউটেরিন, স্কিন,হেড ও নেক ব্লাডার ও সারভিক্স। থেরাপ একটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসা পদ্ধতি। রেডিও থেরাপি সাধারণত একটি প্যাকেজের উপর নির্ভর করে। একটি প্যাকেজের খরচ কলকাতায় ১,৮০,০০০ - ১৭,৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

ক্যান্সারের ধরন, জায়গা এবং সময়ের উপর থেরাপির খরচ নির্ভর করে। তবে সেশনে আলাদা আলাদাভাবে থেরাপি দিতে ৩০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে। আজকের পোস্ট থেকে আমরা কেন্দ্র সম্পর্কিত অনেক তথ্য জানলাম। আজকের পোষ্টের মূল বিষয় ছিল থেকে বাঁচার উপায় এবং ক্যান্সার ঝুকি কমাতে যে ১৫টি কাজ খুবই জরুরী সে সম্পর্কিত।

শেষকথা

প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আজকের পোস্ট থেকে আমরা ক্যান্সার সম্পর্কিত নানা রকম তথ্য জানলাম। যেহেতু ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি রোগ সুতরাং আমাদের হলে উচিত ক্যান্সার উপরিক্ত খাবার এবং ব্যবস্থার পরিবর্তন করা। কেননা প্রতিরোধের চেয়ে প্রতিকার সেরা। আজকের পর থেকে আমরা ক্যান্সার থেকে বাঁচার উপায় এবং ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতে যে ১৫টি কাজ খুবই জরুরী সে সম্পর্কে জেনেছি।

সর্বোপরি পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে লাইক এবং ফলো দিয়ে পাশে থাকবেন। প্রয়োজনে সকল তথ্য জানতে নিয়মিত আমাদের একটি ভিজিট করুন। বন্ধুদের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করে তাদের ক্যান্সার সম্পর্কে এবং বুঝতে সাহায্য করুন।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

রাজশাহীি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url