জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

আজকের পোস্টের মুল বিষয় হলো জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে। এছাড়াও আমরা হাত পা জ্বালা পোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা, এজোস্পার্মিয়া কি চিকিৎসা আছে, দাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা, অনিয়মিত মাসিকের চিকিৎসা, এলার্জির ঘরোয়া চিকিৎসা ইত্যাদি সম্পর্কেও আলোচনা করবো।
জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা
তাহলে চলুন বিভিন্ন ধরনের অসুখের কারন এবং তার প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নেই।

জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা

জরায়ু ইনফেকশনের প্রধান কারন হলো বিভিন্ন ধরনের ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাক এর কারনে এই অসুখ হয়ে থাকে। যৌন সংক্রামিত বিভিন্ন রোগ, যোনিতে থাকা ব্যাক্টেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট হলে, যৌনমিলন চলাকালে সুরক্ষা ব্যবহার না করা, অপরিস্কার পানিতে সাতার কাটা, অপরিস্কার টয়লেট ব্যবহার করা, এন্টিবায়োটিক এর অজানা ব্যবহার এবং গর্ভপাতের কারনে মহিলাদের জরায়ুতে ইনফেকশন হয়ে থাকে। এখন চলুন জেনে নেই জরায়ু ইনফেকশনের বিভিন্ন লক্ষন সম্পর্কে জেনে নেই। লক্ষণগুলি হলোঃ
  • মেয়েদের অনিয়মিত মাসিক হওয়া শুরু হয়।
  • শরীরে সবসময় জ্বর জ্বর থাকে।
  • সহবাসের সময় ব্যথা লেগে থাকে।
  • মুলমুত্রে ত্যাগ করার সময় রক্ত বের হয়ে থাকে।
  • পুরো শরীরে জ্বালাপোড়ার সমস্যা শুরু হয়।
  • কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা শুরু হয়।
এতক্ষন আমরা জরায়ু ইনফেকশনের বিভিন্ন লক্ষন সম্পর্কে জানলাম। এখন আমরা জরায়ু ইনফেকশনের চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে জানবো।
জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসাঃ
  • যৌনাঙ্গের যে স্থানে ইনফেকশনের সৃষ্টি হয়েছে সে স্থানে দই এর ব্যবহার করা।
  • নারিকেল তেল ব্যবহার করা।
  • আপেল সিডার ভিনেগার আক্রান্ত স্থানে লাগানো এবং দুইবেলা খাওয়া।
  • রসুন এর পেস্ট তৈরি করে আক্রান্ত স্থানে লাগানো।
  • যৌনমিলনের সময় সুরক্ষা ব্যবহার করা।
  • ধুমপান ত্যাগ করা।
  • সুতির কাপড় পরিধান করা।
  • বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সেবন করা।
  • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া।

হাত পা জ্বালা পোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা

পরবর্তীতে আমরা জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানবো। এখন চলুন জেনে নেই হাত পা জ্বালাপোড়া কেন করে এবং এর ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে। বিভিন্ন কারনে আমাদের পায়ের এবং হাতের তালু জ্বালাপোড়া করে।

জ্বালাপোড়ার ফলে আমাদের শরীরে ব্যথার সৃষ্টি হয় এবং সেই ব্যথা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। অতিরিক্ত পরিমানে তেলযুক্ত খাবার খাওয়া, শরীর অতিরিক্ত কষা হয়ে গেলে, পানি কম খেলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এখন চলুন জেনে নেই হাত পা জ্বালাপোড়ার চিকিৎসা সম্পর্কে। চিকিৎসা পদ্ধতি নিম্নরুপঃ
  • প্রতিদিন সকালে খালি পেটে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া।
  • ব্যথা এবং জ্বালাপোড়া যুক্ত স্থানে ঠান্ডা পানির সেক দেওয়া।
  • মাছের তেল জ্বালাপোড়া যুক্ত স্থানে মালিশ করা।
  • যে স্থানে জ্বালাপোড়া করবে সেই স্থানে হলুদ লাগিয়ে দেওয়া।
  • ব্যথাযুক্ত স্থানে ম্যাসেজ করা।

এজোস্পার্মিয়া কি চিকিৎসা আছে

জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে আমরা পরবর্তীতে জানবো। এখন চলুন জেনে নেই এজোস্পারমিয়া রোগের কারন এবং লক্ষন সম্পর্কে। একজন পুরুষের যখন বীর্যের মধ্যে শুক্রানু থাকে না তখন পুরুষের বন্ধ্যাত্বতা হয়ে থাকে। এই অবস্থাকে এজোস্পারমিয়া বলা হয়। এজোস্পারমিয়া রোগের বিভিন্ন লক্ষন নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ 
  • অতিরিক্ত পরিমানে মাদক সেবন করা।
  • টেস্টিকুলার বিকাশের দুর্বল অবস্থার কারনে।
  • প্রজনন ব্যবস্থায় আঘাত পেলে।
  • ইনজেকশন বা সার্জারির কারনে।
  • হরমোনের তারতম্যের কারনে।
  • শুক্রনালীতে টিউমার এর কারনে।
এতক্ষন আমরা এজোস্পারমিয়ার বিভিন্ন কারন সম্পর্কে জানলাম। এখন চলুন জেনে নেই এই রোগ থেকে মুক্তির বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে। উপায়সমুহ নিম্নরুপঃ
  • অস্ত্রোপচার এর মাধ্যমে এজোস্পারমিয়ার ব্লক ঠিক করা।
  • অন্ডকোষে বায়োপসি সঞ্চালন করে।
  • অন্ডকোষে থাকা বিভিন্ন শিরার অপারেশন করার মাধ্যমে।

নাকের পলিপাস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

পরবর্তীতে আমরা জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানব। এখন চলুন জেনে নেই নাকের পলিপাস এর ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে। আমরা প্রায় সবাই এর সমস্যায় ভুগে থাকি। নাকে পলিপাস সাধারনত এলারজির কারনে হয়ে থাকে।

আমাদের নাকের অভ্যন্তরে কোষে যে দেয়ালগুলো থাকে তা অনেক পাতলা হয়ে থাকে। যার কারনে মাঝে মাঝে এই দেয়ালগুলোতে পানি জমে যায় এবং নাক বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় আমাদের নিঃশ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হয় এবং নাক দিয়ে পানি ঝরে।

নাকের এই অবস্থাকে নাকের পলিপাস বলা হয়। এখন চলুন জেনে নেই পলিপাস দূর করার ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা সম্পর্কে।
  • আমাদের প্রতিদিনের খাবারে আমরা হলুদ খেতে পারি। কারন হলুদ আমাদের নাকের পলিপাস দূর করতে সাহায্য করে।
  • রসুন আমাদের দেহের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর সাথে সাথে এন্টিবায়োটিক এর মত কাজ করে। প্রতিবেলার খাবারে রসুন খেলে আমাদের নাকের পলিপাস দূর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • আদা তে বিভিন্ন ধরনের কার্যকরী উপাদান থাকে। যা আমাদের নাকের পলিপাস দূর করতে সক্ষম।
  • নাকের পলিপাস দূর করতে আমরা আনারস খেতে পারি।

দাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

পরবর্তীতে আমরা জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানবো। এখন চলুন জেনে নেই দাদ রোগের ঘরোয়া বিভিন্ন চিকিৎসা সম্পর্কে। দাদ হলো এক ধরনের ছোয়াচে চর্মরোগ। যা বিভিন্ন ফাঙ্গাল ইনফেকশনের কারনে হয়ে থাকে।

আমাদের পা থেকে মাথা পর্যন্ত এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দাদ হলো এক ধরনের ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ জাতীয় অসুখ। এটি সাধারনত গোল হয়ে কিছুটা জায়গা জুড়ে অবস্থান করে এবং ঘা এর মত সৃষ্টি হয়।

চিকিৎসা না নিলে এটি আমাদের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এখন চলুন জেনে নেই দাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে।
  • বিভিন্ন ধরনের লোশন বা জেল ব্যবহার করা।
  • বাজারে দাদ এর বিভিন্ন মলম পাওয়া যায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেগুলো ব্যবহার করা।
  • ত্বক সবসময় পরিস্কার রাখতে হবে এবং শুকনা রাখাও জরূরী।
  • আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহার করা কাপড় গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখা এবং পরবর্তীতে তা ধুয়ে দেয়া।

কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা

পূর্বে আমরা জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে। তার পূর্বে আমরা জানবো আমাদের কোমরের পিছনে কেন ব্যথা হয়ে থাকে তা সম্পর্কে। কারনগুলো নিম্নরুপঃ
  • মেরুদন্ডে টিউমার দেখা দিলে।
  • কোমরের আশে পাশে ইনফেকশন হলে।
  • শরীরের ওজন হঠাত বেড়ে গেলে।
  • মাংসপেশী দুর্বল হয়ে গেলে।
  • একটানা অনেকক্ষন হাটলে বা দাঁড়িয়ে থাকলে।
  • ভারী কোনো কিছু মাথা বা কোলে বহন করলে।
এতক্ষন আমরা কোমর ব্যথার বিভিন্ন কারন সম্পর্কে জানলাম। এখন আমরা জানবো কোমর ব্যথা দূর করার বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে। চিকিৎসা পদ্ধতি নিম্নরুপঃ
  • এক জায়গায় বেশিক্ষন বসে না থাকা।
  • প্রতিদিন সময় করে ব্যায়াম করা।
  • নরম বিছানায় ঘুমানো থেকে বিরত থাকা।
  • ব্যথাযুক্ত স্থানে সেক দেওয়া।
  • প্রতিদিন নিয়ম মেনে আদা খাওয়া।
  • দুধের সাথে হলুদ মিশিয়ে খেলে কোমর ব্যথা দূর হয়ে যায়।
  • এলোভেরার শরবত কোমরের ব্যথার জন্য কার্যকরী।
  • ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়া।

অনিয়মিত মাসিকের চিকিৎসা

পূর্বে আমরা জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো অনিয়মিত মাসিকের চিকিৎসা সম্পর্কে। চিকিৎসা পদ্ধতি নিম্নরুপঃ
  • পর্যাপ্ত পরিমানে বিশ্রাম নেওয়া।
  • প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করা।
  • মেডিটেশন করা।
  • তাজা ফলমূল খাওয়া।
  • সুষম খাবার খাওয়া।
  • লবন খাওয়া থেকে দূরে থাকা।
  • ক্যাফেইন গ্রহন থেকে দূরে থাকা।

এলার্জির ঘরোয়া চিকিৎসা

পূর্বে আমরা জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানব এলারজির ঘরোয়া বিভিন্ন চিকিৎসা সম্পর্কে। আমাদের মধ্যে অনেকের এই এলারজির সমস্যা রয়েছে।
বায়ুর কারনে অথবা কিছু খাবার আছে যা খেলে আমাদের শরীরে এলারজির সমস্যা দেখা দেয়। রক্ত দূষিত হয়ে গেলে এই রোগের লক্ষন বেশি দেখা দেয়। এখন চলুন জেনে নেই এলারজির ঘরোয়া বিভিন্ন চিকিৎসা সম্পর্কে।
  • শীতের মধ্যে মাস্ক পরে বাইরে যাওয়া।
  • সকালে বাইরে বের হওয়ার আগে মাথাসহ পুরো শরীর ঢেকে নেওয়া। যেন বাইরের ধুলাবালি শরীরে প্রবেশ করতে না পারে।
  • ঠান্ডা মেঝেতে খালি পায়ে না হাটা।
  • গরম জামাকাপড় পরিধান করা।
  • এপেল সিডার ভিনেগার এর সাথে মধু মিশিয়ে খেলে আমাদের এলারজির সমস্যা দূর হয়ে যায়।
  • পানির সাথে সামান্য পরিমানে মধু মিশিয়ে খেলে এই সমস্যা দূর হয়।
  • আদা চা এর সাথে মধু খেলে এলারজির সমস্যা দূর হয়।

বাচ্চাদের চুলকানির ঘরোয়া চিকিৎসা

পূর্বে আমরা জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা বাচ্চাদের চুলকানি দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানবো।
  • চুলকানিযুক্ত স্থানে বরফের সেক দেওয়া।
  • শসা বেটে ব্যবহার করলে চুলকানি কিছুটা উপশম হয়ে থাকে।
  • চা থেকে তৈরি তেল এর সাথে নারিকেল তেল মিশিয়ে শরীরে ব্যবহার করলে বাচ্চাদের চুলকানির সমস্যা দূর হয়।
  • এলোভেরার রস চুলকানিযুক্ত স্থানে লাগালে চুলকানি কিছুটা উপশম হয়।
  • শিশুকে সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন রাখতে হবে।
  • নিয়মিত গোসল করাতে হবে।
  • অতিরিক্ত গরমে রাখা যাবে না।
  • ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে।

লেখকের মন্তব্য

আজকের পোস্ট থেকে আমরা জরায়ু ইনফেকশন হলে ঘরোয়া চিকিৎসা, হাত পা জ্বালা পোড়ার ঘরোয়া চিকিৎসা, এজোস্পার্মিয়া কি চিকিৎসা আছে, দাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা, অনিয়মিত মাসিকের চিকিৎসা, এলার্জির ঘরোয়া চিকিৎসা ইত্যাদি সম্পর্কে জেনেছি।

আশা করি আজকের পোস্ট থেকে আপনি আপনার মূল্যবান তথ্য পেয়েছেন। এই ধরনের পোস্ট নিয়মিত পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট ফলোও করুন এবং নিয়মিত নতুন নতুন পোস্ট পড়ার মাধ্যমে জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url