মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ - ডেঙ্গু মশার ছবি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আজকের পোস্ট থেকে আমরা জানবো, মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ এবং ডেঙ্গু মশার ছবি সম্পর্কে বিস্তারিত। আপনি যদি মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে যান এবং মশা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য যেমন মশা থেকে সৃষ্টি বিভিন্ন রোগ, ডেঙ্গু মশার ছবি, মশার আয়ু কত দিন, এডিস মশা ও ডেঙ্গু মশা চেনার উপায় ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য। কেননা আজকের পোস্টে আমরা এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
তাই মশা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
মশা
মশা হচ্ছে একটি ছোট্ট প্রাণী। দেখতে অনেকটা ছোট হলেও এর অত্যাচার অনেক বড়। মশার অত্যাচার বর্তমানে জনজীবন হুমকির মুখে। এত এত বেশি মশার উৎপাদন হওয়ার কারণে বসবাস করা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। মশা যে শুধু কামরায় এবং রক্ত খায় সেরকম কিন্তু না। এগুলোর পাশাপাশি এরা ক্ষতিকর জীবাণু বহন করে যা আমাদের শরীরে নানারকম রোগ বেটির জন্ম দেয় এমনকি মৃত্যু ঘটায়। বর্ষার মৌসুমে মশার প্রজনন বৃদ্ধি পায়। মশা সাধারণত পানির উপর ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা হয়।
একটি মশা অনেকগুলো ডিম পারে যার কারণে এদের উৎপাদন অনেক বেশি। বর্তমান সময়ে মশা জনজীবনে হুমকির প্রধান কারণ। মশা অনেক প্রকার হয়ে থাকে তারমধ্যে ডেঙ্গু মশা এবং এডিস মশা খুবই মারাত্মক। আজকের পোস্ট থেকে আমরা মশা ও মশা বাহিত বিভিন্ন রোগ এবং ডেঙ্গু মশার ছবি সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ
প্রিয় পাঠক পূর্বে আমরা মশার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এখন আমরা জানবো মশা ও মশা বাহিত বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে। মশা নানা রকম রোগের বাহক হিসেবে কাজ করে। এদের জন্ম সাধারণত জঙ্গল অথবা জমাকৃত ডোবা নালার পচা পানিতে। এর নানা রকম রোগের জীবাণু বহন করে থাকে যেমন ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, পীথজ্বর, জিকা ভাইরাস, ফাইলেরিয়া, চিকুনগুনিয়া ইত্যাদি।
এ রোগ গুলো মশার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়ে থাকে। একটি মশা শুধুমাত্র মানুষের রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে না এরা রক্তের পাশাপাশি আরও অনেক কিছু খায়। এদের মোট দাঁতের সংখ্যা ৪৭ টি। যা তাদের রক্তের পাশাপাশি অন্যকিছু খেতে সাহায্য করে। মানুষের রক্তের প্রোটিনকে ব্যবহার করে এরা ডিম পেড়ে বংশবিস্তার করে। মশাবাহিত আরও অনেক রোগ রয়েছে যেমন
- ম্যালেরিয়া
- ডেঙ্গু
- চিকুনগুনিয়া
- পীতজ্বর
- জিকা ভাইরাস
- ফাইলেরিয়া
- ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস
- ইয়োলো ফিভার
- টুলারেমিয়া
- রস নদী জ্বর
- ডিরোফিলেরিয়াসিস
- জাপানিজ এনসেফালাইটিস
- সেন্ট লুইস এনসেফালাইটিস
- বারবাহ বনজ্বর
উপরোক্ত রোগগুলো মশা ও মশাবাহিত রোগ হিসেবে পরিচিত। প্রিয় পাঠক আজকের পর থেকে আমরা জানবো মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ এবং ডেঙ্গু মশার ছবি সম্পর্কে বিস্তারিত।
ডেঙ্গু মশার ছবি
প্রিয় পাঠক এখন আমরা জানবো ডেঙ্গু মশা সম্পর্কে। আমার অনেকেই আছি যারা ডেঙ্গু মশা সম্পর্কে জানিনা। আসলে ডেঙ্গু বলে কোন মশা হয় না। ডেঙ্গু একটি জীবাণুর নাম এবং একটি রোগের নাম। উত্তর ডেঙ্গু জীবাণু বহনকারী মশার নাম হচ্ছে এডিস এজিপ্টি। এডিস মশাকে সাধারণ মানুষ ডেঙ্গু মশা নামে চিনে। তাই আমরা এডিস মশাকে ডেঙ্গু মশা বলে জানি।
এমনকি মানুষ গুগলে ডেঙ্গু মশা নামে অনেক কিছু সার্চ করে। তারা আসলে জানে না ডেঙ্গু বলে কোন মশা নেই। ডেঙ্গু একটি ভাইরাসের নাম অর্থাৎ একটি জীবাণুর নাম। উক্ত জীবাণু অথবা রোগ সৃষ্টিকরি মশার নাম হচ্ছে এডিস মশা। এডিস মশা কামড়ালে ওই আক্রান্ত স্থানে অনেক চুলকায় এবং ফুলে যায়। অনেক সময় মশা রক্ত খেলেও আমরা বুঝতে পারি না কারণ মশা তার হুল ফোটানোর আগে কিছু তরল ব্যাথা নাশক ঘন উপাদান মানুষের ত্বকের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়।
যার কারণে আমরা অনেক সময় টেরই পায় না মশাই রক্ত খেলে। আজকের পোস্ট থেকে আমরা জানতে পারবো মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ ও ডেঙ্গু মশার ছবি সম্পর্কে বিস্তারিত। এখন আমরা একটি ডেঙ্গু মশার ছবি দেখে নিব
মশার আয়ু কত দিন
একটি মশা সাধারণত খুব বেশি আয়ু নিয়ে পৃথিবীতে আসে না। একটি মশা ২ দিন থেকে ৭ দিন সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকে। তবে কিছু কিছু প্রজাতি ভেদে আয়ু কাল আলাদা আলাদা হতে পারে। তবে প্রায় সবগুলো মশাই ২ থেকে ৭ দিনের কম বেশি সময়ের মধ্যে মারা যায়। তবে একটি পূর্ণবয়স্ক এডিস মশা গড়ে ১৫ থেকে ৪০ দিন পর্যন্ত বাঁচে।
মশার আয়ু কাল সাধারণত তাপমাত্রা এবং আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে। তবে পুরুষ মশা একটু কোন সময়ে বাঁচে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে একটি মেয়ে মশা ৬-৮ সপ্তাহ সময়ও বাঁচে। এগুলো নির্ভর করে তাপমাত্রা এবং আবহাওয়ার ওপর। তাহলে আমরা জেনে গেলাম একটি মশার আয়ু কত দৃিন সে সম্পর্কে। আজকের পোস্টে আমরা জানবো মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ ও ডেঙ্গু মশার ছবি সম্পর্কে বিস্তারিত।
এডিস মশা ও ডেঙ্গু রোগ
আমার আগেই জেনেছি যে এডিস মশা ডেঙ্গু রোগ সৃষ্টি করার জন্য দায়ী জীবাণু বা ভাইরাস বহন করে। ডেঙ্গু ভাইরাসের আক্রমণে ডেঙ্গু রোগ হয়। ডেঙ্গু একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় রোগ। সাধারণত এডিস মশার কামড়ের ৩ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। উক্ত উপসর্গ দেখা দেয়ার পাশাপাশি আরো কিছু সমস্যা হতে পারে যেমনঃ
- জ্বর
- বমি
- গাঁটে ব্যথা
- পেশিতে ব্যথা
- গায়ে ফুসকুড়ি
- মাথা ব্যথা
উপরোক্ত লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে এডিস মশার কামড়ের কারণে। ডেঙ্গু রোগ ছাড়াও ইলিশ মশার কামড়ে পীতজ্বরের মত মারাত্মক রোগ হতে পারে। একটি এডিস মশা কামড়ের ফলে আক্রান্ত স্থানে প্রথমে ফুলে যেতে পারে তারপর সেখানে চুলকাতে চুলকাতে শক্ত গুটির মত হয়ে যাবে। ইলিশ মশা কামড়ানোর পরপরই জ্বর হতে পারে।
যদি মশা কামড়ানোর সাথে সাথে জ্বর না হয় তাহলে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে দেখা দিতে পারে। প্রিয় পাঠক আমরা ইতিমধ্যেই ৩০ মশা ডেঙ্গু রোগ সম্পর্কে জেনে গেছি। আজকের পোষ্টের মূল আলোচনার বিষয় হচ্ছে মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ এবং ডেঙ্গু মাছের ছবি সম্পর্কে বিস্তারিত।
এডিস মশার বাসস্থান
আমরা হয়তো অনেকেই জানি না যে এরিড মশা আসলে বাড়ির কোথায় কোথায় বংশবিস্তার করতে পারে। আসুন জেনে নেই ইলিশ মশার বাসস্থান সম্পর্কে।
- ড্রাম বা বেরেল
- পুরনো টায়ার
- লন্ড্রি ট্যাঙ্ক
- ফেলে রাখা বোতল
- টিনের ক্যান
- নির্মাণধিন ভবনের ব্লক
- পুরনো জুতা
- ফুলের টব
- পরিত্যক্ত খেলনা
- কাঠ বাসের ফোকর
- ইটের গর্ত
- বাড়ির দেয়াল
- ছাদ ইত্যাদি।
প্রিয় পাঠক আমরা ইলিশ মাছের বাসস্থান সম্পর্কে সো ধারণা পেলাম। এখন আমাদের উচিত এডিস মশা রোধে উক্ত মশার বাসস্থানগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। অথবা উক্ত স্থানে মশা নিরোধক রাসায়নিক কেমিকাল স্প্রে করা।
ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কত সময় পর জ্বর হয়
আজকের পোস্টটি মূল আলোচনার বিষয় হচ্ছে মশা মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ এবং ডেঙ্গ বিস্তারিত। ডেঙ্গু মশা অর্থাৎ এডিস মশা কামড়ানো কত দিন পর জ্বর হয় এটা অনেকেরই অজানা। ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কতদিন পর জ্বর হয় এ সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। একটি ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর সাথে সাথে কামড়ানো স্থানে চুলকাতে চুলকাতে ফুলে যেতে পারে।
সেখান থেকে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পাঁচ থেকে সাত দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত হবে। প্রাথমিক লক্ষণ জ্বরের পাশাপাশি আরো কিছু কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে যা আমরা উপরের তথ্য থেকে জেনেছি।
ডেঙ্গু মশা চেনার উপায়
অনেকেই ডেঙ্গু মশা চিনতে পারেনা। ডেঙ্গু মশা বলতে ইলিশ মাসে অনেকে চিনে না। ইলিশ মশার সাধারণত খালি চোখে সনাক্ত করা যায় না। কারণ অন্যান্য মশার গুলোর মত এডিস মশা দেখতে একইরকম। তবে এডিস মশা দেখতে সাধারণত মাঝারি আকৃতির হয় এবং তার গায়ে-পায়ে সাদা কালো ডোরাকাটা ডোরাকাটা দাগ থাকে। এই বৈশিষ্ট্য গুলো দেখে আমরা ডেঙ্গু মশা চিনতে পারি। আজকের আলোচনা থেকে আমরা মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছি।
মশা তাড়ানোর উপায় কি
মশা তাড়ানোর অনেক উপায় আছে তার মধ্যে কিছু প্রাকৃতিক এবং কিছু রাসায়নিক কেমিক্যাল ব্যবহার করে। রাসায়নিক কেমিক্যাল ব্যবহার অনেক ক্ষতি তাই আমরা ঘরোয়া কিছু প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে জানবো। এখন আমরা মশা তাড়ানোর কিছু প্রাকৃতিক উপায় জানবো। আজকের আলোচনা থেকে আমরা মশা ও মশাবাহিত বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছি।
- লবঙ্গ ও লেবুর ব্যবহার
- পুদিনা ব্যবহার
- হলুদ বৈদ্যুতিক আলো
- নিমপাতার ব্যবহার
- টবে লেমন গ্রাস লাগানো
- নিমের তেলের ব্যবহার
- নিশিন্দা ও নিমপাতার গুঁড়া
- চা- পাতা পোড়ানো
- ক্যানটিপ তেল
- চামচিকার ব্যবহার
- জোরে ফ্যান চালান
- কর্পূরের ব্যবহার
- রজ্ঞিন কাপড় এড়িয়ে চলুন
- সুগন্ধি ব্যবহার
- কেরোসিনের ব্যবহার
- জমানো পানি ফেলুন
- রসুনের স্প্রে করুন
- নারিকেলের আঁশ পোড়ান
- ধোঁয়া দিন
- বাড়ি আশেপাশে পরিষ্কার রাখুন
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আজকের পোস্ট থেকে আমরা মশা ও মশা ভাই তো বিভিন্ন রোগ ডেঙ্গু মশার ছবি মশার আয়ু কত দিন এডিস মশা ও ডেঙ্গু রোগ এডিস মশার বাসস্থান ডেঙ্গু মশা কামড়ানোর কতদিন পর জ্বর হয় ইত্যাদি অনেক বিষয় সম্পর্কে জেনে গেছি।
সর্বোপরি পোস্টটি ভালো লেগে থাকলে লাইক দিয়ে এবং ফলো দিয়ে তাদের সাথে থাকবেন। আমরা আপনাদের জন্য নিয়মিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করে থাকি। পোস্টটি বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে তাদের মশা সম্পর্কে জানতে এবং সচেতন হতে সাহায্য করুন।
রাজশাহীি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url