নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা - নবজাতকের টিকার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জানবো নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা ও নবজাতকের টিকার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত। আমরা আরও জানবো নবজাতকের অসুস্থতার লক্ষণ, নবজাতকের জন্ডিস হলে মায়ের করনীয়, নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়, নবজাতকের জন্য দোয়া সম্পর্কে। আপনি যদি আপনার পরিবারের নবাগত নজাতকের জন্য এই সব বিষয়ে জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক নবজাকের শিশুর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা
পরিবারে কোন নবজাতকের আগমন ঘটলে মা বাবা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাকে নিয়ে চিন্তিত থাকে। প্রথমত তার নাম কি রাখবে সে সম্পর্কে। নাম সম্পর্কিত অনেক আর্টিকেল আপনারা আমাদের ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবেন। তারপর নবজাতকের খাবার, পোশাক ইত্যাদি বিষয়ে। কিন্তু এই বিষয় গুলোর চাইতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নবজাতকের টীকা। নবজাতক শিশুকে অনেক রকম টীকা প্রদান করা হয়। যেমনঃ
- হেপাটাইটিস বি
- ওপিভি
- যক্ষ্মা (বিসিজি)
- টিটেনাস
- পোলিও টিকা
- ইনফ্লুয়েঞ্জা
- হুপিংকাশি
- নিউমোনিয়ার টীকা
- ডিপথেরিয়া
- টাইফয়েডের টিকা
- জলাতঙ্কের টিকা
- হাম ও রুবেলার টিকা
ইত্যাদি নানা রকম টীকা দেওয়া হয়ে থাকে। আপনার নবজাতককে এই টীকাগুলো দিয়ে দিতে পারেন। টীকা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। একটি টীকা শরীরের অনাগত ভাইরাস এর আক্রমণ থেকে পূর্ব থেকে প্রতিরোধ করে। তাই আপনার নবজাতককে নিয়মিত উপরিক্ত টীকা গুলো দিন। আজকের পোস্টের আলোচনার বিষয় হচ্ছে নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা ও নবজাতকের টিকার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত।
নবজাতকের টিকার তালিকা
আজকের পোস্টের আলোচনার বিষয় হচ্ছে নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা ও নবজাতকের টিকার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত। উপর থেকে আমরা নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা জানবো নবজাতকের টিকার তালিকা সম্পর্কে।
- ডিটিপি - 1 ( ডিপথেরিয়া, টিটেনাস এবং পারটুসিস )
- আইপিভি – 1 ( পোলিও, স্নায়ু সমস্যাজনিত ভাইরাস )
- এইচআইবি – ১ ( হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি, ব্যাকটেরিয়া )
- হেপাটাইটিস বি - 2 ( হেপাটাইটিস বি সংক্রমণ )
- রোটাভাইরাস- ১ ( রোটাভাইরাস সংক্রমণ )
- পিসিভি– 1 ( নিউমোনিয়া, ওটিটিস মিডিয়া, মেনিনজাইটিস এবং নিউমোকক্কাল ব্যাকটেরিয়া রোধে )
উপরিক্ত টীকা গুলো একজন নবজাতককে দেওয়া হলে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ছোট থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত এই ধরণের ভাইরাস আক্রমণ করতে পারবে না। তাই আপনার নবজাতক শিশুকে এই সকল টীকা নিয়মিত দিন।
নবজাতকের অসুস্থতার লক্ষণ
একটি বাড়ীতে কোন নবজাতকের অসুখ হলে সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ে। একটি বড় মানুষের অসুখ হলে আপনাকে মুখ দিয়ে বলতে পারে। কিন্তু একটি নবজাতক শিশু অসুস্থ হলে বোঝা যায় না। কারণ তারা বলতে বা প্রকাশ করতে পারে না। তাহলে একজন মা হিসেবে আপনি কীভাবে বুজবেন আপনার নবজাতক শিশুটি অসুস্থ কি না। আসুন জেনে নিই একটি নবজাতক শিশুর অসুস্থতার লক্ষনঃ
- প্রথমত মায়ের বুকের দুধ টেনে খেতে পারবে না।
- নবজাতকের শরীরের তাপমাত্রা বেশি হয়ে যাওয়া।
- বাচ্চার ত্বক বা চেহারা অনেক হলুদ হয়ে যাওয়া।
- দিনে অনেক বার পাতলা পায়খানা করলে।
- শরীর অনেক ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া।
- শরীর লালচে হয়ে ( ভেতরে পুঁজ জমে ) যাওয়া।
- হাসি বা কান্না করছে না, নড়াচড়া কম।
- অতিরিক্ত খিচুনি হয়ে যাওয়া।
- অতিরিক্ত কান্নাকাটি করা।
- অনেকবার বমি করলে।
- শরীরে লাল রঙের গুঁটি বা র্যাশ দেখা দিলে।
উপরিক্ত লক্ষণগুলো দেখা দিলে ধরে নিবেন আপনার বাসার নবজাতক অসুস্থতায় ভুগছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। আজকে আমরা জানবো নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা ও নবজাতকের টিকার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত।
নবজাতকের জন্ডিস হলে মায়ের করনীয়
একটি নবজাতক শিশুর নানারকম রোগ হতে পারে। তার মধ্যে জন্ডিস অন্যতম। সাধারণত জন্মের দুই সপ্তাহের মধ্যে নবজাতক শিশুর জন্ডিস দেখা দিতে পারে। একটি নবজাতকের নানারকম কারণে জন্ডিস হতে পারে। যেমনঃ
- নবকজাতকের কম ওজন হলে
- মায়েদের স্তনে দুধের পরিমাণ কম থাকলে
- মা বাবার ডায়াবেটিক থাকলে
- জন্মের পর পায়খানা কম পরিমাণে করে
উপরিক্ত কারণ ব্যতীত আরও নানারকম কারণে একটি নবজাতকের জন্ডিস হতে পারে। নবজাতকের জন্ডিস হলে মুখমণ্ডল, বুকের অংশ, পেট, ঊরু এবং হাত ও পায়ের ত্বক হলুদ আকার ধারন করবে। জন্ডিস হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়া উচিত। কেননা জন্ডিস অনেক মারাত্মক একটি রোগ। জন্ডিস লিভার আ ধরলে নিশ্চিত মৃত্যু। তাই একটি নবজাতকের জন্ডিস এর লক্ষণ দেখা দিলে খুব দ্রুত মা ও নবজাতককে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। ডাক্তারগণ জন্ডিসের ২ ধরণের চিকিসসা দেয় যেমনঃ
- ফটোথেরাপি
- এক্সচেঞ্জ ট্রান্সফিউশন
জন্ডিসের মাত্রা অনেক বেশি হলে ফটোথেরাপি দেওয়া হয়। আজকে আমরা জানবো নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা ও নবজাতকের টিকার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত।
নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়
আজকে আমরা জেনেছি নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা ও নবজাতকের টিকার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত। পেট ফাঁপা নবজাতক শিশুর অসুখগুলোর মধ্যে প্রধান। সাধারণত পেটে অধিক গ্যাস জমলে পেট ফেঁপে যায়। এই সময় শিশু কিছুই খেতে পারে না খালি কান্নাকাটি করে। এক্ষেত্রে আপনি বাসায় পেট ফাঁপা দূর করতে পারেন।
- প্রথমে নবজাতককে চিত করে শোয়ান
- আবার কিছুক্ষণ উপুড় করে শোয়ান
- এই বার শিশুর পেটে আলতো করে চাপ দিন
- চাপ দিয়ার ক্ষেত্রে ওপর থেকে নিচে দিকে নামান
- সাইকেলের প্যাডেল ঘোরানোর মতো করে বাচ্চার পা নড়াচড়া করান।
- কয়েকবার করে বাতাস বের করার চেষ্টা করুন
- এইভাবে গ্যাস অনেকটা কমে যাবে
- আবার হালকা গরম পানি দিয়ে গোটা শরীর মুছে দিন।
- এরপরও যদি পেট ফাঁপা না কমে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
প্রিয় পাঠক উপরিক্ত ঘরোয়া উপায়ে আপনি যদি আপনার নবজাতকের গ্যাস না কমাতে পারেন অর্থাৎ পেট ব্যথা না কমে তাহলে তাকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।
নবজাতকের পেট ফাঁপার ঔষধের নাম কি?
আমরা উপর থেকে নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায় জেনেছি। যদি ঘরোয়া উপায়ে বাচ্চার পেট ফাঁপা না কমে তাহলে আপনি কি ওষুধ খাওয়াবেন আপনার নবজাতককে সেটা অনেকের অজানা। ম্যাগালড্রেট জাতীয় ওষুধ নবজাতকের পেট ফাঁপার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সিমেথিকন পোস্ট অপারেটিভ গ্যাস পেইন থেকে মুক্তি দেয়। তাই আপনার নবজাতকের পেট ফাঁপায় এটি ব্যবহার করতে পারেন। আজকে আমরা জেনেছি নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা ও নবজাতকের টিকার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত।
নবজাতকের জন্য দোয়া
আজকে আমরা জেনেছি নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা ও নবজাতকের টিকার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত। এখন আমরা জানবো নবজাতকের জন্য দোয়া।
উচ্চারণঃ বারাকাল্লাহু লাকা ফিল মাউহুবি লাকা, ওয়া শাকারতাল ওয়াহিবা, ওয়া বালাগা আশুদ্দাহু, ওয়া রুজিকতা বিররাহু।
অর্থঃ আল্লাহ আপনাকে যা দান করেছেন তাতে আপনার জন্য বরকত দিন, আপনি দানকারীর কৃতজ্ঞতা আদায় করুন, সন্তানটি পরিণত বয়স লাভ করুক এবং আপনি তার সদাচার লাভ করুন। আমিন
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জেনেছি নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা ও নবজাতকের টিকার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত। আমরা আরও জেনেছি নবজাতকের অসুস্থতার লক্ষণ, নবজাতকের জন্ডিস হলে মায়ের করনীয়, নবজাতকের পেট ফাঁপা দূর করার ঘরোয়া উপায়, নবজাতকের জন্য দোয়া সম্পর্কে।
আশা করি আপনি আজকের পোস্ট থেকে আপনার নবকাতকের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে গেছে।
সর্বোপরি পোস্টটি ভালো লাগলে একটি লাইক ও ফলো দিয়ে পেজের সাথেই থাকবেন। আমরা নিয়মিত আপনাদের জন্য তথ্য সরবরাহ করে প্রকাশ করে থাকি। বন্ধুদের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করে তাদের দেখার সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।
রাজশাহীি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url