মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত - মুখে ব্রণ কমানোর উপায় সম্পর্কে জানুন

আজকের পোস্টের মুল বিষয় হলো মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত। আমরা আরও জানবো মুখে ব্রণ কমানোর উপায়, ব্রণমুক্ত ত্বক রাখার উপায়, ব্রণ হওয়ার কারণ কি, মুখে ব্রণ হলে কালো দাগ দূর করবো কীভাবে, ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো ইত্যাদি বিষয়ে। শুধু যে বয়সের কারণে ব্রণ বের হয় তা কিন্তু নয় অন্যান্য কারণেও ব্রণ বের হয়। রাত জাগা, দুশ্চিন্তা, রোদে পড়া এগুলো কারণেও মুখে ব্রণ হতে পারে। বর্তমানে ব্রণ একটি বড় সমস্যা। ছেলেমেয়ে সবারই এই সমস্যাটি হয়। 
মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্রণ সম্পর্কিত সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত।

ভূমিকা

ব্রণ যেহেতু একটি স্বাভাবিক সমস্যা তাই একটু সচেতন হলে এবং একটু সাবধানতা অনুসরণ করলেই এই সমস্যা থাকে আমরা মুক্তি পেতে পারি। কিছু কিছু অভ্যাসের পরিবর্তন পরিষ্কার পরিছন্ন থাকলে এবং ঘরোয়া টিপস গ্রহণ করলে এই সমস্যা থেকে আমরা মুক্তি পাব। আজকের পোস্টে আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করবো।

ব্রণ কি

ব্রণ হলো মানব ত্বকের একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগবিশেষ যা বিশেষত লালচে ত্বক, প্যাপ্যুল, নডিউল, পিম্পল, তৈলাক্ত ত্বক, ক্ষতচিহ্ন বা কাটা দাগ ইত্যাদি দেখে চিহ্নিত করা যায়। একটা নিদিষ্ট বয়স পর আমাদের এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

মুখে ব্রণ হলে আমাদের ত্বক দেখতে অনেক খারাপ লাগে। তবে কিছু কিছু ঘরোয়া টিপস গ্রহন করলে এই সমস্যা অনেক কম হবে। অনেক এ বলে ব্রণ বয়সের কারন এ হয়। আবার কেউ কেউ বলে যে মুখে ময়লা জমে থাকার জন্য ব্রণ হয়ে থাকে। আজকের পোস্টের মুল বিষয় হলো মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত। 

ব্রণ হওয়ার কারণ কি

আজকের পোস্টের মুল বিষয় হলো মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত। শুধু যে বয়ঃসন্ধিকালের জন্য মুখে ব্রণ হয় তেমন কিন্তু না। বিভিন্ন কারণে মুখে ব্রণ হতে পারে।
  • বেশি রাত জাগা
  • অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা
  • খারাপ চিন্তা ভাবনা করা
  • পানি কম খাওয়া
  • ত্বকের যত্ন না নেওয়া
  • তেল মসলাদার খাবারের প্রতি বেশি ঝোঁক
  • অনিয়মিত জীবনযাপন করা
  • মুখ না ধোয়া
  • পরিষ্কার পরিছন্ন না থাকা
  • মানসিক চাপ
  • খারাপ প্রসাধনী ব্যাবহার করা
  • হরমোন জনিত সমস্যা
  • ধূমপান, মদ পান করলে
  • জিনগত সমস্যা

ব্রণ ভালো রাখার উপায়

আজকের পোস্টের মুল বিষয় হলো মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত। এখন আমরা জানবো ব্রণ ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে। 
  • মুখ সবসময় পরিস্কার রাখা।
  • ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে যেকোনো ফেসওয়াশ দিয়ে মুখটা পরিষ্কার করা।
  • খারাপ চিন্তা ভাবনা না করা।
  • নিদিষ্ট একটা বিউটি প্রোডাক্ট ব্যবহার করা।
  • কোন বিউটি প্রোডাক্ট কিনার সময় তার মেয়াদ/ পিএইচ এগুলোর মান যাচাই করে কিনা।
  • খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করা
  • বেশি বেশি পানি পান করা
  • তৈলাক্ত প্রসাধনী ব্যবহার না করা
  • ব্রণ হলে খোঁটানো যাবে না

ছেলেদের মুখে ব্রণ হওয়ার কারণ

ব্রণ হওয়ার কারণগুলো আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি। উঠতি বয়সে ব্রণ বেশি হয়। এই সময় ছেলেদের শরীরে হরমোন এর পরিবর্তন হয়। হরমোনের পরিবর্তনের সাথে সাথে ত্বকেরও পরিবর্তন হয়। মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের ব্রণের তীব্রতা একটু বেশিই হয়।
ছেলেরা বাইরে বেশি চলাফেরা করে এতে বাইরের ধুলাবালি আমাদের ত্বকের লোমকূপে জমা হয় এবং ব্রণের সৃষ্টি হয়। মানহীন প্রসাধনী ব্যবহার করার ফলে ব্রণ হয়। ছেলেরা সাধারণত খারাপ চিন্তা ভাবনা বেশি করে ( সেক্সয়ালি) যার কারণে ব্রণ হতে পারে। অনেক সময় ঋতু পরিবর্তনের কারণেও ত্বকে ব্রণ সমস্যা দেখা দিতে পারে। আজকের পোস্টের মুল বিষয় হলো মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত। 

মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত

প্রিয় পাঠক আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত। তাহলে চলুন জেনে নেই মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত সে সম্পর্কে। আমরা পূর্বে জেনেছি ন্যাচারাল সমস্যা। ব্রণ হওয়া নানা কারণ রয়েছে। মুখে ব্রণ হলে সাধারণত আমাদের কোল্ড কমপ্রেস উপায়টি অবলম্বন করা উচিত। কোল্ড কমপ্রেস বলতে বুঝায় ঠান্ডা পানি অথবা বরফ ব্যবহার করা। ক্ষেত্রে ব্রণের উপর সরাসরি ঠান্ডা পানি বা বরফ লাগানো যেতে পারে এতে আপনি যে উপকার গুলো পাবেন তা হচ্ছেঃ 
  • ব্যথা কমে যাবে
  • ব্রণ ছোট হয়ে যাবে
  • প্রদাহ কমে যাবে
  • কালো দাগ সৃষ্টি হবে না
  • তাড়াতাড়ি ব্রণটি ভালো হয়ে যাবে
এক্ষেত্রে আপনি সরাসরি বরফ বা ঠান্ডা পানি মুখে দিতে পারেন অথবা একটি পাতলা কাপড়ের মধ্যে কিছু পরিমাণ বরফ নিয়ে আক্রান্ত স্থানে অর্থাৎ যেখানে ব্রণ বের হয়েছে সেখানে ১০ থেকে ১৫ মিনিট কমপ্রেস করুন। এভাবে দিনে অন্তত দুই থেকে তিনবার করুন। দেখবেন আপনার ব্রণ ভালো হয়ে গেছে এবং পরবর্তী সময়ে খুব কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ব্রণ হলে আরো কিছু কিছু কাজ করা উচিত যেমনঃ
  • বর্ণ গেলে না দেওয়া
  • ব্রণকে নাড়াতাড়া না করা
  • রোদে না বেড়ানো
  • সঠিক ফেসওয়াস ব্যবহার করা
  • ব্রণ না খোটানো
  • কোন ক্রিম বা ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করা
  • মুখে কোন তেল না দেওয়া
  • বার বার মুখ না ধোয়া
  • ফাস্টফুড না খাওয়া
  • মুখে বিউটি প্রোডাক্ট ইউজ করা
  • মুখে মেকআপ না করা
মুখে ব্রণ সমস্যার তাড়াতাড়ি সমাধানের জন্য উপরোক্ত কাজগুলো মেনে চলা উচিত। এখন আমরা জানলাম মুখে ব্রণ হলে কি করা উচিত সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।

ব্রণ হলে করনীয়

উঠতি বয়সে ব্রণ হতেই পারে। সুতরাং ভয়ের কোন কারণ নেই। ব্রণ একটি স্বাভাবিক সমস্যা তাই ব্রণ হলে মুখে হাত দেওয়া যাবে না। হাত দিলে ব্রণ আরও বড় ও বেশি হয়। অনেক খুঁটাখুঁটির কারণে ত্বকে সংক্রমণ বেড়ে যায় খত সৃষ্টি হয়। ব্রণ থেকে কালো দাগও সৃষ্টি হয়।
  • ব্রণ হলে ব্রণের ওপর কোন প্রসাধনী লাগানো যাবে না।
  • পানি দিয়ে মুখ আলতো করে ধৌত করা।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
  • ব্রণযুক্ত ত্বক সেভ না করা
  • অনেক বার শুধু পানি দিয়ে মুখ ধৌত করা
  • প্রচুর শাকসবজি ফলমূল খাওয়া
  • ভাজাপড়া না খাওয়া
  • ব্রণে হাত না দেওয়া
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো

মুখে ব্রণ কমানোর উপায়

আজকের পোস্টের মুল বিষয় হলো মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত। মুখে ব্রণ বের হলে দেখতে খারাপ লাগে। ব্যাথা করে, মুখ চুলকাই। ব্রণের আবার কারণে মুখে খত সৃষ্টি হয় এবং সেটা বেশি নাড়াচাড়া করলে কালো দাগ হয়ে যায়। তাই সবাই মুখে ব্রণ কমানোর উপায় জানতে চাই। এখন আমরা ব্রণ কমানোর কিছু বিশেষ বিশেষ উপায় সম্পর্কে বলবো।

বরফঃ নিয়মিত ঘুমানোর পূর্বে মুখে বরফ দিয়ে ঘষুন। এই যে আপনার মুখে ব্রণ অনেক কমে যাবে। তাই দ্রুত ব্রণ সমস্যার সমাধানের জন্য নিয়মিত মুখে বড় অথবা ঠান্ডা পানি দেন। এতে আপনার মুখে থাকা জীবানুগুলো এবং ছোট ছোট ব্যাকটেরিয়া গুলো মারা যাবে।

নিম তেলঃ নিম তেল মুখে ব্রণ সমস্যার জন্য অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। নেমে তেলে ব্যাকটেরিয়া রোধী ভেষজ উপাদান থাকে যা ঝকঝকে ত্বক পেতে সাহায্য করে। ওকে ব্যাকটেরিয়ান নাশক হিসেবে এবং দাগ ছোপ ও ছত্রাকের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নিয়মিত মুখে ব্যবহার করুন।

অ্যালোভেরাঃ এলোভেরা ত্বকের জন্য অত্যন্ত কার্যকর একটি উপাদান। দামি দামি ফেসওয়াস তৈরি করে ক্ষেত্রে এলোভেরা ব্যবহার করা হয়। অনেকে মুখে এলোভেরা জেল ব্যবহার করে থাকে কারণ এলোভেরা জেল আপনার ত্বক কে মসৃণ উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। আমার সাথে ত্বকে ব্রণ সমস্যা সমাধান দেয়।

হলুদঃ প্রাচীনকাল থেকে মুখে মানুষ হলুদের ব্যবহার করে আসে। যখন উন্নত মানের বিউটি প্রোডাক্ট অফিসও আসছিল না তখন থেকে মানুষ হলুদের ব্যবহার করে আসছি। ত্বকের জন্য হলুদ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

টি ট্রি অয়েলঃ খুবই দ্রুত মুখের অয়েলি ভাব এবং ড্রোন কমাতে টি ট্রি ওয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এইটি আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তেলতেলে ভাব দূর করে এবং ত্বককে ব্রণ মুক্ত মসৃণ করে।

উপরিক্ত তথ্য থেকে আমরা ইতিমধ্যেই মুখে ব্রণ কমানোর উপায় সম্পর্কে জেনে গেছি। এগুলো সাধারণত ঘরোয়া উপায়ে মুখে তেলতেলে ভাব ও ব্রণ ভাব দূর করার উপায়। তাই ব্রণ সমস্যার সমাধানের জন্য উপরোক্ত কাজগুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন।

ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো

প্রিয় পাঠক আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে আমাদের মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত সেই সম্পর্কে বিস্তারিত। এখন আমরা জানবো ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো সে সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেরা কিছু বর্ণের ফেসওয়াস সম্পর্কে।
  • পন্ড'স পিম্পল ক্লিয়ার ফেসওয়াশ
  • ডার্মালজিকা ব্রেকআউট ক্লিয়ারিং ফোমিং ওয়াশ
  • পিয়ার্স আলট্রা মাইল্ড ফেসওয়াশ ইন অয়েল ক্লিয়ার গ্লো
  • ল্যাকমে ব্লাশ অ্যান্ড গ্লো কিউয়ি ক্রাশ জেল ফেসওয়াশ
  • সিম্পল ডেইলি স্কিন ডিটক্স পিউরিফায়িং ফেসিয়াল ওয়াশ
উপরিক্ত ফেসওয়াস গুলো সাধারণত মুখের ব্রণের জন্য অনেক কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। তাই মুখে বর্ণ সমস্যা সমাধানের জন্য উক্ত ফেসওয়াস ব্যবহার করতে পারেন।

মুখে ব্রণ হলে কালো দাগ দূর করবো কীভাবে

ব্রণ হলে সেই ব্রণ থেকে কালো দাগ হয় যার কারণে ত্বক দেখতে অনেক খারাপ লাগে। এই দাগ দূর করার কিছু ঘরোয়া টিপস হলঃ
  • শসার রস ব্যবহার করে মুখের কালো দাগ দূর করা যায়।
  • আপেল ও মধুর মিশ্রণ ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। আপেলের পেস্ট তৈরি করে এতে ৫-৬ ফোঁটা মধু মিশিয়ে পেস্টটি মুখে লাগিয়ে রাখুন।
  • তুলসি পাতার রসে আছে আয়ুর্বেদিক গুণ। তুলসি পাতার রস খত স্থানে লাগিয়ে কুসুম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • ডিমের সাদা অংশ দিনের যেকোনো সময় ডিমের সাদা অংশ ব্রণের জায়গাই লাগিয়ে রাখতে পারেন এতে আপনার ত্বকের খসখসে ভাব দূর হয়ে যাবে।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আজকের পোস্ট থেকে আমরা জানলাম মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত সে সম্পর্কে। আমরা আরও জেনেছি মুখে ব্রণ কমানোর উপায়, ব্রণমুক্ত ত্বক রাখার উপায়, ব্রণ হওয়ার কারণ কি, মুখে ব্রণ হলে কালো দাগ দূর করবো কীভাবে, ব্রণের জন্য কোন ফেসওয়াস ভালো ইত্যাদি বিষয়ে। 

মিলিয়ে বলা যায়, ব্রণমুক্ত সুন্দর ত্বকের জন্য আমাদের একটু সচেতন হতে হবে। উপরিক্ত টিপসগুলো কাজে লাগাতে হবে। বদভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। পাক পবিত্র থাকতে হবে।তথ্যগুলো ভাল লেগে থাকলে আমাদের পেজের সাথেই থাকুন। কোন বিষয়ে জানার থাকলে কমেন্ট করে বলে দিন। আর বন্ধুদের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করে সবাইকে জানের সুযোগ করে দিন, ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url