মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক কোনটি জেনে নিন বিস্তারিত
বর্তমান সময়ে মুখে ঘা বা আলসার অতি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। ছোট-বড় ছেলে-মেয়ে সবারই মুখে ঘা হয়ে থাকে। এটি সাধারণত অনেক যন্ত্রণাদায়ক হয় এবং খাওয়া-দাওয়া বা কথা বলার সময় অনেক অস্বস্তি অনুভব হয়। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা মুখের ঘা ছবি এবং মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। আমরা আরো জানবো মুখের ঘা এর জেল, বাচ্চাদের মুখের ঘা এর জেল এবং মুখের ঘা এর জন্য কোন ডাক্তার দেখাবো সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।
তাই দ্রুত মুখের ঘা থেকে মুক্তি পেতে এবং মুক্তি পাওয়ার উপায় জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। আশা করি আপনি আপনার কাঙ্খিত তথ্য পেয়ে অনেক উপকৃত হবেন।
মুখের ঘা ছবি
অনেকেরই মুখে ঘা হয় কিন্তু তারা জানে না যে সেটি দেখতে কেমন হয়। তাই অনেকেই মুখের ঘা ভালোভাবে চিহ্নিত করতে পারে না। মনে করে সেটি শরীরের অন্যান্য ক্ষতোর মতো একটি ক্ষত অথবা জিব্বা দ্বারা সৃষ্টি ক্ষত। এখন আমরা মুখের ঘা এর ছবি দেখব। তারপর আমরা মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। নিম্নোক্ত ছবিগুলো যদি আপনার মুখের ঘা এর সাথে মিলে যায় তাহলে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক
উপরের তথ্য থেকে আপনি নিশ্চিত হয়েছেন যে আপনার মুখে ঘা হয়েছে কিনা। মুখের ঘা অনেক জটিল একটি সমস্যা। মুখের বিভিন্ন জায়গায় অথবা জিব্বায় ঘা হতে পারে। জিব্বার ওপরে অংশ ছোট ছোট ছোপছোপ আকারের ফোসকা বা ক্ষত তৈরি হতে পারে। কিংবা জিব্বার তলায়, পেছনে অথবা গালের ওপরে নিচে ছোট ছোট লাল আকৃতির ফোসকা দেখা দিতে পারে। এগুলো খুবই ব্যথার এবং যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে।
মুখের ঘা থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে অনেকগুলো কাজ করতে হবে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মুখের ঘা যদি না ভালো হয় তাহলে ভবিষ্যতে সেখান থেকে জটিল রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই সকলের উচিত খুব দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করে মুখের ঘা ভালো করা। মুখের ঘা নিরাময়ের সাধারণত এন্টিবায়োটিক এর প্রয়োজন হয় না কেননা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি ভাইরাল ইনফেকশন, পুষ্টির অভাব কিংবা এলার্জির মতো সমস্যা থেকে হয়ে থাকে।
তবে মুখে ঘা সাধারণত ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণেও হয়ে থাকে। যদি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাহলে ডাক্তারগণ এন্টিবায়োটিক ঔষধ সাজেস্ট করে। নিচে আমরা কিছু মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক ঔষধ সম্পর্কে জানব।
- ডক্সিসাইক্লিন মাউথওয়াশঃ দীর্ঘস্থায়ী মুখের ঘা দূর করতে এবং মুখে ব্যাকটেরিয়াল মুক্ত করতে ডাক্তাররা এটি দিতে পারে।
- অ্যামিক্সিসিলিনঃ মুখের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ রোদ করতে এটি কার্যকারি ভূমিকা পালন করে।
- মেট্রোনিডাজলঃ এটি এনরুবিক ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমনের জন্য কার্যকর।
- ক্লোরহেক্সিডিন মাউতওয়াশঃ এটি একটি অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ যা মুখকে জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। এবং মুখের বিভিন্ন সংক্রমণ রোধ করে।
সতর্কতা
উপরোক্ত এন্টিবায়োটিকগুলো শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত। কেননা অপ্রয়োজনীয় এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে এটি কার্যকারিতা হারাতে পারে এবং শরীরের নানা রকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই যেকোন ওষুধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই রেজিস্টার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
মুখের ঘা এর জেল
মুখের মধ্যে ঘা বা আলসার খুব স্বাভাবিক এক ঘটনা হলেও দ্রুত এর চিকিৎসা করা উচিত। আলসার বা ঘা নিরাময়ে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ দিতে পারে। মুখের ঘা বা আলসার নিরাময়ে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল মাউথওয়াশ, বি কমপ্লেক্স দিতে পারে। রোগের মাত্রা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেলে ডাক্তারগন এন্টিবায়োটিক ঔষধ করে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় মুখের ঘা এর জন্য বি১২ এবং ফলিক এসিড জাতীয় খাবার গ্রহণ করার প্রয়োজন পড়ে। তবে অনেক ক্ষেত্রে মুখের ঘা এর জন্য অনেকগুলো জেল দেওয়া হয় যেমনঃ
- মাইকোরাল ওরাল জেল ( Micoral oral gel)
- ওরাসোর জেল ( Orasore Gel)
- ডেন্টোজেল ( DentoGel)
- হেস্কিহেল জেল ( Hexigel Gel)
উপরোক্ত জেলগুলো মুখের বিভিন্ন ধরনের ক্ষত অথবা আলসার নিরাময়ে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ক্ষতের আকার আকৃতি, দীর্ঘস্থায়ী ইত্যাদির উপর নির্ভর করে ডাক্তারগন বিভিন্ন ধরণের জেল ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়। তবে যেকোনো ধরণের জেল ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
বাচ্চাদের মুখের ঘা এর জেল
বাচ্চাদের মুখের ঘা হলে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় একটু বেশি যত্ন নিতে হয়। তার প্রধান কারণ হচ্ছে বাচ্চাদের ত্বক ও মিউকোসল স্তর অনেক বেশি সংবেদনশীল এবং নরম হয়। তাই বাচ্চাদের জন্য সাধারণত ব্যবহৃত জেল গুলো অনেক মৃদু এবং নিরাপদ হওয়া উচিত। আজকের আর্টিকেল থেকে আমরা জেনেছি মুখের ঘা ছবি এবং মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে বিস্তারিত। বাচ্চাদের জন্য তৈরি জেলগুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছেঃ
- DentoGel-P ( ডেন্টোজেল-পি)
- Micoral Gel ( মাইকোরাল ওরাল জেল) ইত্যাদি।
তবে বাচ্চাদের যে কোন জেল ব্যবহারের বিকল্প হিসেবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিকিৎসা প্রদান করা যেতে পারে। যারা জেল ব্যবহার করতে চান না তাদের জন্য বিকল্প কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যেমনঃ
মধু
মধুর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক এন্টিব্যাকটেরিয়াল এবং নিরাময় গুণ। তাই ক্ষতের স্থানে মধু প্রয়োগ করলে দ্রুত আরাম মিলতে পারে।
তুলসী পাতা
তুলসী পাতার রস প্রদাহনাশক হিসেবে কাজ করে। আবার তুলসী পাতার মধ্যে কাশি ভালো করার একটি বিশেষ বন্ধু রয়েছে। তাই ঘায়ের স্থানে তুলসী পাতা রস লাগালে আরাম পাওয়া যায়।
লবণ পানি
হালকা কুসুম পানিতে সামান্য পরিমাণে লবণ দিয়ে কুলি করলে অনেক আরাম মিলে। এটি জীবণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
মুখের ঘা এর জন্য কোন ডাক্তার দেখাবো
প্রিয় বন্ধুরা উপর একটু আলোচনা থেকে আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি এই মুখের ঘা এর ছবি ও মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে বিস্তারিত। এখন অনেকেই জানে না মুখে ঘা এর জন্য কোন ধরনের ডাক্তারের শরণাপন্ন হবে। মুখের ঘায়ের জন্য অবশ্যই রেজিস্টার দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জনের শরণাপন্ন হতে হবে। ঘা যদি দীর্ঘদিন ধরে থাকে তাহলে তাহলে অবশ্যই বায়োপসি বা মাংসের টিস্যু পরীক্ষা করে দেখতে হবে। চিকিৎসা গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করে করা উচিত।
লেখকের মন্তব্য
উপরিক্ত তথ্য থেকে আমরা জেনেছি মুখের ঘা ছবি এবং মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে বিস্তারিত। আমরা আরও জেনেছি মুখের ঘা এর জেল, বাচ্চাদের মুখের ঘা এর জেল এবং মুখের ঘা এর জন্য কোন ডাক্তার দেখাবো সেই সম্পর্কে বিস্তারিত।
আশা করি আজকের পোস্ট থেকে আপনি মুখে ঘা সম্পর্কে নানা রকম তথ্য এবং প্রতিকার করার উপায় সম্পর্কে জেনেছেন। যে সকল বন্ধুগণ দীর্ঘদিন ধরে মুখের ঘা এর সমস্যায় ভুগছে তাদের মাঝে পোস্টটি শেয়ার করে তাদের মুখের ঘা এর এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে জানতে সাহায্য করুন।
রাজশাহীি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url